ই-অরেঞ্জসহ ৪ প্রতিষ্ঠানের সদস্যপদ স্থগিত করেছে ই-ক্যাব

ই-অরেঞ্জসহ ৪ প্রতিষ্ঠানের সদস্যপদ স্থগিত করেছে ই-ক্যাব

কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় ই-অরেঞ্জসহ চার ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সদস্য পদ স্থগিত ঘোষণা করেছে ই-ক্যাব। বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) জেনারেল ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, ভোক্তা ও বিক্রেতাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ই-ক্যাব ১৬টি প্রতিষ্ঠানকে ভিন্ন ভিন্ন অভিযোগে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। এর মধ্যে অভিযোগের বিষয়ে জবাব না দেওয়া অথবা সন্তোষজনক জবাব না দেওয়ার কারণে চারটি প্রতিষ্ঠানের সদস্যপদ স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।

এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে, সেগুলো হলো- অর্থ আত্মসাৎ, ক্রেতা ও সরবরাহকারীদের অভিযোগ নিষ্পত্তি না করা, ই-ক্যাবের কারণ দর্শানো ও সতর্কীকরণ পত্রের জবাব না দেওয়া, ই-ক্যাবের দেওয়া অভিযোগের সমাধান না করা, ‘ডিজিটাল কমার্স নির্দেশিকা ২০২১’ প্রতিপালন না করা ও এমএলএম ব্যবসা পরিচালনা করা।

ই-ক্যাব জানায়, নোটিশ পাওয়া অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে নয়টি প্রতিষ্ঠানের কেউ কেউ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করেছে। কেউ কেউ অভিযোগ নিষ্পত্তি ও ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা-২০২১ মেনে চলার প্রতিশ্রুতিসহ সময় প্রার্থনা করেছে। তাই নয়টি প্রতিষ্ঠানকে পর্যবেক্ষণে রেখে অধিকতর তদন্ত চলছে। সন্তোষজনক সমাধান না হলে সেসব প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে অনুরূপ সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।

ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সার ও সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ তমালের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে, ই-ক্যাব সর্বসাধারণকে নিজেদের আর্থিক নিরাপত্তার স্বার্থে অস্বাভাবিক অফার দেওয়া পণ্য কেনাকাটায় সাবধানতা অবলম্বনের অনুরোধ করছে এবং যেসব প্রতিষ্ঠান ‘ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা-২০২১’ প্রতিপালন করছে না, সেসব প্রতিষ্ঠান থেকে কেনাকাটা না করার অনুরোধ করছে। ক্রেতা-ভোক্তারা কোনো প্রতিষ্ঠানের দ্বারা প্রতারিত হয়ে থাকলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরে অভিযোগ করতে পারেন।

তারা বলেন, ক্রেতাদের স্বার্থরক্ষা, ই-কমার্স সেক্টরের আস্থা বহাল রাখা ও উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে ই-ক্যাব বদ্ধপরিকর। সরকার ঘোষিত ‘ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা ২০২১’ ও এসক্রো পদ্ধতি ই-ক্যাবের প্রস্তাবিত দাবি-দাওয়ার ফসল, যা বর্তমানে ক্রেতাদের আর্থিক নিরাপত্তা দেওয়ায় ভূমিকা রাখছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনসহ বিভিন্ন সরকারি তদন্ত সংস্থাকে ই-ক্যাব অনবরত সহযোগিতা করে আসছে।

সংগঠনটি জানিয়েছে, ইতোমধ্যে ই-ক্যাব সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে সঠিক নিয়মে ব্যবসা পরিচালনা ও ক্রেতাদের স্বার্থরক্ষার মাধ্যমে ই-কমার্স খাতের সুনাম রক্ষা করার অনুরোধ করে বার্তা দিয়েছে। বিশেষ করে অস্বাভাবিক অফার বন্ধ করা, সময়মতো পণ্য ডেলিভারি করা, ব্যাংক ডিপোজিটের মাধ্যমে টাকা গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকা, ‘ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা-২০২১’ প্রতিপালন করা, দেশের প্রচলিত আইন মেনে চলা, ভোক্তা অধিকারে আসা অভিযোগ দ্রুত সমাধান করা ও ই-ক্যাবের অভিযোগ সমাধান করে প্রতিবেদন পেশ করার জন্য সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ই-ক্যাব বলছে, সদস্যসহ ক্রেতা ও বিক্রেতাদের যেকোনো পরামর্শ ই-ক্যাব সাদরে গ্রহণ করবে। কিন্তু ই-ক্যাবের দায়িত্ব কর্তব্য সম্পর্কে না বুঝে এবং ই-ক্যাবের নেওয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে না জেনে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ই-ক্যাবের নামে মিথ্যা, মনগড়া ও বানোয়াট তথ্য দিয়ে নেতিবাচক ও উদ্দেশ্যমূলক প্রচারণা চালালে ই-ক্যাব আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন